পদার্থ বিজ্ঞান

ইসিজি (ECG)

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - পদার্থ বিজ্ঞান - জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান(Physics to Save Lives) | NCTB BOOK

ইসিজি হলো ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম ( Electro Cardiogram) শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ। ইসিজি করে মানুষের হৃৎপিণ্ডের বৈদ্যুতিক এবং পেশিজনিত কাজকর্মগুলো পর্যবেক্ষণ করা যায়। আমরা জানি বাইরের কোনো উদ্দীপনা ছাড়াই হৃৎপিণ্ড ক্ষুদ্র বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি করে এবং এই সংকেত পেশির ভেতর ছড়িয়ে পড়ে, যার কারণে হৃৎস্পন্দন হয়। ইসিজি বক্স ব্যবহার করে আমরা হৃৎপিন্ডে এই বৈদ্যুতিক সংকেতগুলো শনাক্ত করতে পারি। এর সাহায্যে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন হার এবং ছন্দময়তা পরিমাপ করা যায়। ইসিজি সিগন্যাল হৃৎপিন্ডের মধ্যে রক্তপ্রবাহের একটি পরোক্ষ প্রমাণ দেয় । 

ইসিজি করতে হলে বৈদ্যুতিক সংকেতগুলো গ্রহণ করার জন্য শরীরে ইলেকট্রোড লাগাতে হয়। দুই হাতে দুটি, দুই পায়ে দুটি এবং ছয়টি হৃৎপিণ্ডের অবস্থানসংলগ্ন বুকের ওপর লাগানো হয়। প্রত্যেকটি ইলেকট্রোড থেকে বৈদ্যুতিক সংকেতকে সংগ্রহ করা হয়। এই সংকেতগুলোকে যখন ছাপানো হয় তখন সেটিকে বলে ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম। 

একজন সুস্থ মানুষের প্রত্যেকটি ইলেকট্রোড থেকে পাওয়া বিদুৎ সংকেতের একটা স্বাভাবিক নকশা থাকে। যদি কোনো মানুষের হৃৎপিন্ডে অস্বাভাবিক অবস্থা তৈরি হয় তখন তার ইলেকট্রোড থেকে পাওয়া সংকেতগুলো স্বাভাবিক নকশা থেকে ভিন্ন হবে।সাধারণ কোনো রোগের কারণ হিসেবে বুকের ধড়ফড়ানি, অনিয়মিত কিংবা দ্রুত হৃৎস্পন্দন বা বুকের ব্যথা হলে ইসিজি করা হয়। এছাড়া নিয়মিত চেকআপ করার জন্য কিংবা বড় অপারেশনের আগে ইসিজির সাহায্য নেওয়া হয়। হৃৎপিণ্ডের যেসব ইসিজি করা যায় সেগুলো হচ্ছে: 

(a) হৃৎপিণ্ডের যেসব অস্বাভাবিক স্পন্দন অর্থাৎ স্পন্দনের হার বেশি বা কম হলে 

(b) হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকলে 

(c) হৃৎপিণ্ডের আকার বড় হয়ে থাকলে 

ইসিজি মেশিনটি অত্যন্ত সহজ-সরল মেশিন কিন্তু এটি ব্যবহার করে শরীরের ভেতরকার হৃৎপিণ্ডের অবস্থার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায় বলে একজন রোগীর চিকিৎসার জন্য এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। 

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion